শহরে চলে এলেন তালাল, স্বাগত জানাতে ভোর রাতে বিমানবন্দরে লাল-হলুদ সমর্থদের উপচে পড়া ভিড়, জিকসনও কি ইস্টবেঙ্গলের পথে?

তখন ভোর রাত সাড়ে তিনটি হবে। কলকাতা বিমানবন্দরে লাল-হলুদ জার্সিতে সমর্থকেরা তখন অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়। ভোর রাতে তাঁদের বাধভাঙা উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতোই। মাদিহ তালালকে বরণ করে নিতেই রাত জেগে অপেক্ষায় ছিলেন ইস্টবেঙ্গল ভক্তরা। আর তালাল বিমানবন্দরের বাইরে আসতেই উচ্ছ্বাসের তীব্রতা বেড়ে চার গুণ হয়ে যায়।

গত মরশুমে আইএসএলে সবচেয়ে বেশি গোলের পাস বাড়িয়েছিলেন এই ফরাসি তারকা প্লেয়ার। গত বছর তিনি ছিলেন পঞ্জাব এফসি-তে। মরশুম শুরুর আগে তালালের সঙ্গে দু'বছরের চুক্তি করে ইস্টবেঙ্গল। তাঁকে পেয়ে লাল-হলুদের আক্রমণ ভাগ যে আরও শক্তিশালী হবে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর সে কারণেই বোধহয় রাত জেগে বিমানবন্দরে তাঁকে বরণ করে নিতে উপস্থিত ছিলেন লাল-হলুদ ভক্তরা।

গত মরশুমে আইএসএলে সর্বাধিক গোল করে সোনার বুট পাওয়া দিমিত্রি দিয়ামান্তাকোস এবং ডুরান্ড কাপে সোনার বুটের মালিক ডেভিড লাললানসঙ্গাও সই করিয়েছে লাল হলুদ। সেই সঙ্গে কলিঙ্গ সুপার কাপে ইস্টবেঙ্গলকে চ্যাম্পিয়ন করানোর পর সর্বাধিক গোলদাতা তথা অধিনায়ক ক্লেটন সিলভাকেও ধরে রেখেছে। ক্লেটন এই মরশুমে দলের অধিনায়ক হিসাবেও নির্বাচিত হয়েছেন। সেই সঙ্গে সর্বাধিক অ্যাসিস্টের রেকর্ডধারী তারকা প্লেয়ার দলে যোগ দেওয়ায় বাড়ল ইমামি ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণের ঝাঁঝ। এই চার জনকে নিয়েই ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ সাজাতে চাইছেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত।

গত বছর অগস্টে পঞ্জাব এফসিতে সই করেছিলেন মাদিহ তালাল। আইএসএলের ২২টি ম্যাচ, কলিঙ্গ সুপার কাপের ৩টি ম্যাচ মিলিয়ে মোট ১৯১০ মিনিট মাঠে ছিলেন। পঞ্জাব এফসি গত মরশুমে যে ৬টি ম্যাচে জিতেছে, তার প্রত্যেকটিতে হয় নিজে গোল করেছেন, নয়তো গোল করিয়েছেন ২৬ বছরের তালাল। তালাল গত আইএসএলে ৬টি গোল করেছেন, অ্যাসিস্টের সংখ্যা ১০ (কলিঙ্গ সুপার কাপে ২টি)। বল নিয়ন্ত্রণে মুন্সিয়ানা দেখানো তালালের দখলে গত আইএসএলে সবচেয়ে বেশি ৪২টি ড্রিবলের নজিরও রয়েছে। সবচেয়ে বেশি সুযোগ তৈরির নিরিখে গত আইএসএলে তালাল আছেন দ্বিতীয় স্থানে (৫৭)।

তালালের ইস্টবেঙ্গলে সই করার পিছনে সবচেয়ে বড় কারণ হলেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। ফরাসি তারকা এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘কোচ যেভাবে আমার সঙ্গে আলোচনা করেছেন, সেটাই আমাকে লাল-হলুদে নিয়ে এসেছে। দেখুন, জানি গত আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের ফল ভালো হয়নি। কিন্তু দু'টো নকআউট প্রতিযোগিতাতেই ফাইনাল খেলেছে, একটায় চ্যাম্পিয়নও হয়েছে। সেই সাফল্যের উপর দাঁড়িয়ে একটা সুন্দর এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে ওরা, ভবিষ্যতের জন্য। আমার সেটা খুব পছন্দ হয়েছে। আরও একটা কারণ হল, কলকাতা শহর। এই শহরটা ভারতের অন্য অনেক শহরের থেকে এগিয়ে। সমর্থকরাও দুর্দান্ত। সেটাও একটা কারণ। তাছাড়া ইস্টবেঙ্গেল দেশের অন্যতম ঐতিহ্যশালী ক্লাব, আগামী মরশুমে এএফসি-তে খেলবে। আমি কীভাবে ইস্টবেঙ্গলে খেলার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতাম বলুন?’

এদিকে শোনা যাচ্ছে, লাল হলুদে আসতে পারেন জিকসন সিং। হিসেব অনুযায়ী আরও একটি মরশুমের জন্য কেরালা ব্লাস্টার্সের চুক্তি রয়েছে জিকসনের।কিন্তু বাড়তি ট্রান্সফার ফি দিয়ে জাতীয় দলের এই ফুটবলারকে নেওয়ার জন্য মরিয়া লাল-হলুদ ব্রিগেড। এছাড়াও এই ফুটবলারকে পেতে আগ্রহী কলকাতার আর এক প্রধান মোহনবাগান। বিশেষ সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, এই ফুটবলারের সঙ্গে চার বছরের একটি বিশেষ ডিলে নাকি সম্মতি জানিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। পাশাপাশি ট্রান্সফার ফি নিয়েও কথাবার্তা নাকি শেষের পথে। শোনা যাচ্ছে, জিকসন লাল-হলুদে খেলতেই আগ্রহী।

2024-07-16T04:40:09Z dg43tfdfdgfd