খেলার মাঝেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বাংলাদেশের গ্র্যান্ড মাস্টার দাবাড়ু

শুভব্রত মুখার্জি: ন্যাশানাল চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ চলাকালীনই হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাংলাদেশের গ্র্যান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখানে তাঁকে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, ম্যাচ চলাকালীন হৃদরোগে আক্রান্ত হন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে লুটিয়ে পড়েন বোর্ডের উপরেই। তাঁর এই অকালমৃত্যুর ফলে গোটা বাংলাদেশের ক্রীড়া মহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

শুক্রবার একটি টুর্নামেন্টে মুখোমুখি হয়েছিল বাংলাদেশের দুই গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান এবং এনামুল হোসেন রাজীব। ম্যাচ চলাকালীন হঠাৎ লুটিয়ে পড়লেন জিয়াউর। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে হারুনুর রশিদ। ঘটনাচক্রে রশিদ একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আর্বিট্রর। রশিদ জানিয়েছেন, ‘জিয়া অসুস্থ হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যেই আমরা ওকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে নিয়ে যাই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে ওকে ফেরানো গেল না।’

প্রসঙ্গত বাংলাদেশে চলছিল জাতীয় দাবা প্রতিযোগিতা। শুক্রবার দ্বাদশ রাউন্ডের খেলা ছিল। এই রাউন্ডে রাজীবের বিপক্ষে খেলছিলেন জিয়াউর। ম্যাচটি শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের সময় বেলা তিনটে নাগাদ। ম্যাচ চলাকালীন বিকেল ছটার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে লুটিয়ে পড়েন তিনি। উল্লেখ্য ১৯৭৪ সালের ১ মে জন্ম হয়েছিল জিয়ার। দাবার প্রতি আকর্ষণ ছোট থেকেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃ-বিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন জিয়াউর। পরবর্তীতে দাবাতেই নিজের কেরিয়ার গড়ার দিকে মন দেন।

১৯৮৭ সালে আন্তর্জাতিক রেটিং অর্জন করেছিলেন জিয়াউর। ১৯৯০ সালে ফিদে মাস্টার, ১৯৯৩ সালে আন্তর্জাতিক মাস্টার এবং ২০০২ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলেন। বিষয়টি নিয়ে বলতে গিয়ে আর এক প্রতিযোগী এনামুল হক জানিয়েছেন, ‘যখন খেলছিল, তখন জিয়াকে দেখে বোঝাই যায়নি ও অসুস্থ। হঠাৎ করেই দেখি খেলতে খেলতে ও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। দাবার বোর্ডেই লুটিয়ে পড়ছে। আমি আর সময় নষ্ট করিনি। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। যখন জিয়া লুটিয়ে পড়ছিল, আমি ভেবেছিলাম ও নীচু হয়ে জলের বোতল তুলছে। এর পরেই ও সংজ্ঞা হারিয়ে পড়ে যায়। আমরা ওকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাই। পাশের টেবিলে খেলছিল ওর ছেলে।’

বাংলাদেশে এই মুহূর্তে পাচঁ জন গ্রান্ড মাস্টার রয়েছেন, যাঁদের মধ্যে ক্রমতালিকায় শীর্ষে ছিলেন জিয়াউর। ২০২২ সালে দাবা অলিম্পিয়াডে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন জিয়া। পাশাপাশি জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়নশিপেও তিনি একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন। তাঁর অকাল মৃত্যুতে বাংলাদেশের ক্রীড়া জগতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

2024-07-06T04:16:17Z dg43tfdfdgfd