VIDEO: ছক্কা মারার বেয়াদপি! মাঠেই খুুনোখুনির জোগাড়, আম্পায়ারকেও ধাক্কা, বাংলাদেশে ফের কলঙ্কিত ক্রিকেট

Bangladesh South Africa Cricketers physical altercation at Mirpur: ক্রিকেটকে বলা হয় ‘জেন্টলম্যান'স গেম’। এক সময় এই খেলায় প্লেয়াররা সাদা জার্সি পরে মাঠে নামতেন এবং হার-জিতের চেয়েও বেশি গুরুত্ব দিতেন শালীনতা ও ভদ্রতাকে। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভদ্রলোকদের এই খেলা এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে গালাগালি, স্লেজিং ও লড়াই-ঝগড়া প্রায় নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদিও মাঠে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় বা তর্কের ঘটনা প্রায়শই দেখা যায়, কিন্তু কোনও খেলোয়াড় বা আম্পায়ারের সঙ্গে শারীরিকভাবে অভব্য আচরণের ঘটনা ছিল প্রায় অজানা। তবে বাংলাদেশে মিরপুরের মাঠে যা ঘটেছে, তা পুরো ক্রিকেট দুনিয়াকে লজ্জায় ফেলে দিয়েছে।

বুধবার মিরপুরের শের-এ-বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ ইমার্জিং টিম এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে চার দিনের ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে এক উত্তপ্ত মুহূর্তে হাতাহাতি বেঁধে যায়। শুরুতে খেলোয়াড়েরা একে অপরকে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকেন এবং এরপর যখন আম্পায়ার পরিস্থিতি সামলাতে এগিয়ে আসেন, তখন তাঁরাও খেলোয়াড়দের অভব্য আচরণের শিকার হন। ক্রিকেট ইতিহাসে এমন দৃশ্য বিরল, যা দীর্ঘদিন ধরে এই খেলার মর্যাদাকে কলঙ্কিত করে রাখবে।

আরও পড়ুন ২ রানেই অলআউট পুরো টিম! IPL-এর মাঝেই তোলপাড় ফেলা ঘটনা, দেখুন Video

এই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা ঘটে বাংলাদেশ দলের ইনিংসের ১০৪তম ওভারে, যখন বাংলাদেশের রিপন মণ্ডল ও দক্ষিণ আফ্রিকার ত্সেপো এনটলুলির মধ্যে তর্ক শুরু হয়। এনটলুলির ওভারের প্রথম বলেই রিপন ছক্কা মারেন। তারপরই এনটলুলি এগিয়ে এসে রিপনকে ধাক্কা দেন, আর সেখান থেকেই উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। রিপনও পাল্টা ধাক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে ওঠে যে এনটলুলি রিপনের হেলমেট ধরে টান দেন। হেলমেট টেনে মাথা ঝাঁকিয়ে দেন। দু'পক্ষের মধ্যে রীতিমতো ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। ভিডিও দেখে যেন মনে হচ্ছে, ক্রিকেট ম্যাচ নয়, যেন কুস্তির আখড়া! খেলোয়াড়রা ভদ্রতার সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে যান এবং এমনকি আম্পায়ারদেরও রেহাই দেননি।

খেলোয়াড়দের উপর আজীবন নিষেধাজ্ঞার দাবি 

যদিও এই ম্যাচটি প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায়নি, তবুও এতে অংশগ্রহণকারী খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ম্যাচ রেফারি সেলিম শাহেদ জানিয়েছেন, এই ঘটনা নিয়ে সরকারিভাবে রিপোর্ট তৈরি করা হবে এবং দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের কাছে পাঠানো হবে যাতে তারা উপযুক্ত পদক্ষেপ করতে পারে।

সেলিম শাহেদ বলেন, “আমি যখন আম্পায়ারদের রিপোর্ট হাতে পাব, তখন আমি নিজে একটি রিপোর্ট তৈরি করব এবং তার সঙ্গে শাস্তির সুপারিশও থাকবে। উভয় বোর্ডকে সেই রিপোর্ট পাঠানো হবে যাতে তারা ব্যবস্থা নিতে পারে।”

ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা এই ঘটনায় ভীষণভাবে মর্মাহত এবং দোষী খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। এই ধরনের আচরণ শুধু ক্রিকেট নয়, গোটা ক্রীড়াজগতের জন্যই এক বিশাল লজ্জা।

2025-05-28T16:34:31Z